ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

বেগম জিয়াকে আটকে রেখে ‘আপনি’ ইলেকশন জিতে যাবেন, প্রশ্ন মইনুলের

ফারমিনা তাসলিম : তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেছেন, এমনিতেই ইলেকশন সম্বন্ধে প্রশ্ন আছে। তারপর বেগম জিয়াকে আটকে রেখে নির্বাচনে জিতে যাওয়া যাবে? এমন প্রশ্ন তুলে তিনি চ্যানেল আই’র তৃতীয় মাত্রা অনুষ্ঠানে বলেছেন, জনগণ পছন্দ করে যাকে নির্বাচিত করে, তাকে আর পছন্দ না করলে তাকে প্রতিহত করে ক্ষমতাচ্যুত করবে। যদিও বেগম খালেদা জিয়াকে বাইরে রেখে ইলেকশন করা তাদের জন্য কোন অসুবিধাজনক হবে না।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার রায় নিয়ে উৎসাহ দেখানোর কিছু নেই। পৃথিবীর অনেক দেশেই শীর্ষ নেতাকে আদালত সাজা দিয়েছেন। কিন্তু ওইসব দেশে রাজনীতিবিদরা হাসি তামাশা করেননি বা উৎসাহ দেখাননি।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, কষ্টের সঙ্গে বলতে হয়, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পর আমরা এত সংগ্রাম করেছি তারপরও নির্বাচনটাকে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করতে পারছি না। এই নির্বাচন নিয়ে যত রকম গ-গোল বাজছে। এই যে কাজটা হলো আমি জানি না নির্বাচন সামনে থাকলে পলিটিক্যালকে প্রভিকশন দিয়ে শুধু আইন আর কনভিকশন দিয়ে চিন্তা করলে হবে না পলিটিক্যাল লিডারসদের। তাদের চিন্তা করতে হয় সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা রাখতে হবে। এটা নির্বাচনের বছর। বেগম খালেদা জিয়াকে এখনই যদি সাজা দেয়া না হতো তবে কিছু যেত বা আসতো না। কিন্তু এখন যেহেতু নির্বাচন নিয়ে একটা গ-গোল অলরেডি আছে তার ওপর একটা কনভিকশন আমার ব্যক্তিগত ধারণা নির্বাচনে সংশয় ছিলই এটা আরো আরো এগ্রোভেট করা হলো। আপনি এমনিতেই আমাকে বিশ্বাস করেন না। আরো অবিশ্বাসের কাজ করলাম আমি। আমি আরো অসুবিধায় পড়লাম। এইটার মনে হয় দরকার ছিল না।

নির্বাচনের বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক চিন্তার তাগিদ দিয়ে মইনুল বলেন, আমি ক্ষমতায় থাকব, থাকবই, থাকব এধরনের চিন্তার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে জেলের বাইরে রেখে নির্বাচন করা উচিত, আমি ব্যক্তিগতভাবে তাই মনে করি।

ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, বাংলাদেশে এখন মিথ্যা আর দুর্নীতির রাজত্ব চলছে। আওয়ামী লীগের জন্য যেটা অসুবিধা বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাপারটা উনার আইনজীবী হিসেবে দেখি তাহলে দেখেন ৫ বছর শাস্তি হয়েছে। তাকে ঠিক চোর বলাটা বাংলা ভাষার অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে। বলেন সে দোষী, ক্রাইম করেছে। এটাও বলা যেতে পারে সে ট্রাস্ট ভঙ্গ করেছে। মানুষের এতিমখানার টাকার বিশ্বাসভঙ্গ করেছেন। তিনি চুরি করেছেন, এই কথাটা বলা ঠিক নয়। পলিটিক্যাল লিডার হিসেবে কথা বলছি, পলিটিশিয়ানদের পলিটিক্যাল চিন্তা ভাবনা না থাকে তখন এটা দুঃখজনক হয়। পলিটিক্যাল লিডার বলছেন, আমি তাকে পলিটিক্যালি ফেইস করব। এখন আমরা সবাই ক্রিমিনাল হয়ে গেছি। তার মানে পলিটিশিয়ান সকলের বিরুদ্ধেই মামলা আছে। পলিটিশিয়ানের পক্ষেও আছে, বিএনপির পক্ষেও আছে।

রায়ের পরে রাজনীতি কোন পথে যাচ্ছে- এমন প্রশ্নে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, আইন যদি নিজস্ব ধারায় চলতে থাকে তবে বিচার হয়েছে। এর সঙ্গে তো রাজনীতির কোনো অংশ থাকার কথা না। আইন মতো বিচার হয়েছে শাস্তি হয়েছে। আপিল করবে। দুইটা আপিল এখনও হবে। রাজনীতিটা আমার মনে হয় আনা হয়েছে এইটা মনে হয় বলতে পারি কাউকে অফেন্স না দিয়ে। এটা মনে হয় সরকারের পক্ষে বোকামি হয়েছে। মামলায় ঠকছে এটা মনে হয় আইনের ব্যাপার। এটা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বা মন্ত্রী হিসেবে কারো এখানে কোনো উৎসাহ দেখানো উচিত না। শাস্তি হয়েছে এটা ‘আই অ্যাম নট কনসার্নড উইথ, ল হ্যাজ টেকেন ইটস রোল’। এই যে আমাদের আশেপাশে অনেক দৃষ্টান্ত দেয়া হয়। সাউথ কোরিয়ায় প্রেসিডেন্টকে কনভিকশন দিয়েছে এটা নিয়ে কোনো দলে হাসাহাসি হয়নি, মিষ্টি খাওয়া হয়নি। ইসরাইলে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। কিন্তু এ নিয়ে কোনো দলীয় আলোচনা হয়নি। অতএব, প্রধানমন্ত্রীর এটা ডিফেন্ড করারও দরকার নাই আর বিএনপিরও রাস্তায় আন্দোলন করারও কিছু নাই। এটা আমার কথা। যেহেতু বাংলাদেশে এই জিনিসটা চলছে না সেহেতু রাজনীতি এতটা ঘোলাটে হয়ে গেছে।

পাঠকের মতামত: